১০৫ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়

Written by Nazmul Hossain

১০৫ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়.জ্বর ১০৫ ডিগ্রির ওপর উঠে গেলে অনেক কাশি, পেটব্যথা, প্রস্রাবে জ্বালা, বেশি বমি হলে, জ্বরের ঘোরে অসংলগ্ন আচরণ করলে বা অচেতনের মতো হলে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া জরুরি। এক সপ্তাহের বেশি জ্বর থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ দরকার।

১০৫ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়

চারদিকে অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত। কারও ফ্লু, কারও ডেঙ্গু, কারও আবার চিকুনগুনিয়া। এমনিতে জ্বর কিন্তু খারাপ নয়। শরীরের যেকোনো সংক্রমণ বা প্রদাহের বিপরীতে প্রথম প্রতিরোধব্যবস্থা হলো জ্বর।

শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপর গেলে জ্বর হয়েছে বলে ধরা যায়। জ্বর হলেই যে ডাক্তারের কাছে ছুটতে হবে বা ওষুধ খেয়ে জ্বর নামাতে হবে, ব্যাপারটি তা নয়। বেশির ভাগ জ্বরই ভাইরাসজনিত। এতে কোনো ওষুধ লাগে না। এমনিতেই পাঁচ থেকে সাত দিন পর সেরে যায়।

জ্বর নামাতে শরীরের নিজস্ব কৌশল আছে। কাঁপুনি ও শীত শীত অনুভূতির মাধ্যমে জ্বর আসে। এরপর ঘাম দিয়ে ছেড়ে যায়। এ সময় শরীর বাড়তি তাপমাত্রা হারায়।

জ্বরে কাবু হলে বাড়িতে কিছু কৌশলের মাধ্যমে নামানোর চেষ্টা করতে পারেন। এতে কাজ না হলে সাধারণ প্যারাসিটামল-জাতীয় ওষুধ খাওয়া যায়। তবে চিকিৎসককে না জানিয়ে কখনোই দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাবেন না। অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন-জাতীয় ওষুধও না। তাহলে আসুন জেনে নিই বাড়িতে আমরা কী ব্যবস্থা নিতে পারি।

১. খুব জ্বর এলে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিতে পারেন। পানির তাপমাত্রা আপনার শরীরের তাপমাত্রার চেয়ে দুই ডিগ্রি কম হবে। বাথটাবে বা ঝরনার ধারায় গোসল করা ভালো। বাড়তি তাপমাত্রা পানিতে চলে যাবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিটের বেশি ভিজবেন না। গোসল সেরে দ্রুত শুকনো তোয়ালে দিয়ে পানি মুছে নিন। বিছানায় কাঁথা বা কম্বলের নিচে ঢুকে পড়ুন। দেখবেন একটু পর ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে যাচ্ছে।

২. গোসল সম্ভব না হলে শরীরের ত্বক স্পঞ্জ করতে পারেন। পরিষ্কার সুতির পাতলা কাপড় গামলার পানিতে ভিজিয়ে চিপে নিন। পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকবে (গরম বা বরফ-ঠান্ডা নয়)। এবার এই ভিজে কাপড় দিয়ে সারা শরীর মুছে নিন। ভেজা কাপড় দিয়ে মোছার পর শুকনো কাপড়ের সাহায্যে পানি মুছে নিন। জ্বর না কমা পর্যন্ত এটা করতে থাকুন।

৩. জ্বরের মধ্যে হারবাল ও গ্রিন চা বেশ কাজে দেয়। চায়ের মধ্যে এক টুকরো আদা, এলাচি, লবঙ্গ বা খানিকটা মধু মিশিয়ে এই হারবাল চা তৈরি করা যায়। অথবা এক বাটি গরম স্যুপ খেলেও দেখবেন ঘাম হচ্ছে এবং জ্বর নেমে যাচ্ছে। এক কাপ পানিতে দুই চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ও এক চামচ মধু মিশিয়ে দিনে দু-তিনবার পান করুন। এটি শরীরের তাপমাত্রা বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে।

৪. জ্বর হলে শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়ে পড়ে। তাই প্রচুর পানি ও তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে। নয়তো জিব শুকিয়ে যাবে। প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাবে বা গাঢ় হয়ে যাবে। তাই জ্বর হলে দিনে দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করুন।

৫. জ্বর হলে শরীরের বিপাকক্রিয়া বাড়ে। তাই বাড়তি ক্যালরির প্রয়োজন হয়। অনেকে জ্বর হলে কিছু খাবেন না বলে ঠিক করেন। এতে নিজেরই ক্ষতি। অল্প হলেও পুষ্টিকর কিছু খেতে হবে। জ্বরের রোগীর পথ্য বলে আসলে কিছু নেই। সবই খাওয়া যায়। তবে তেল-মসলাযুক্ত খাবার হজম করতে কষ্ট হয়। বিপাকে ক্যালরিও বেশি খরচ হয়। তাই সহজপাচ্য খাবারই ভালো। সবজি মেশানো জাউভাত, পরিজ, ওটমিল, স্যুপ ইত্যাদি যথেষ্ট পুষ্টি জোগাবে। ফলের রস বা ফল খেতে চেষ্টা করুন। বিশেষ করে ভিটামিন সি-যুক্ত ফল, যেমন: কমলা, মালটা, লেবু, জাম্বুরা, আনারস ইত্যাদি। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

জ্বর ১০৫ ডিগ্রির ওপর উঠে গেলে অনেক কাশি, পেটব্যথা, প্রস্রাবে জ্বালা, বেশি বমি হলে, জ্বরের ঘোরে অসংলগ্ন আচরণ করলে বা অচেতনের মতো হলে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া জরুরি। এক সপ্তাহের বেশি জ্বর থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ দরকার।

You May Also Like…

সিজোফ্রেনিয়া রোগের মুক্তির উপায় লক্ষণ কারণ ঔষধের নাম তালিকা

সিজোফ্রেনিয়া রোগের মুক্তির উপায় লক্ষণ কারণ ঔষধের নাম তালিকা

সিজোফ্রেনিয়া রোগের মুক্তির উপায় লক্ষণ কারণ ঔষধের নাম তালিকা.সিজোফ্রেনিয়া আসলে একপ্রকার জটিল এবং দীর্ঘস্থায়ী মানসিক...

0 Comments

Submit a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *