মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা । মেথি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা । মেথি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা:

মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা:

মেথি বা Fenugreek‘ কথা বলার সাথে সাথে প্রচুর সুস্বাদু খাবারের কথা মনে পড়ে যায়। মেথি রান্না-বান্না থেকে শুরু করে প্রসাধনীর যাবতীয় কাজে ব্যবহার করা হয়! আমাদের প্রিয় পাঁচফোড়ণের একটা উপাদান হলো মেথি।

মেথি হলো একধরণের ভেষজ জাতীয় গাছ যা দক্ষিণ ইউরোপ এবং এশিয়ার দেশগুলোতে মধ্যে পাওয়া যায়। মেথির বীজগুলি দেখতে ছোট ছোট এবং সোনালি রঙের। মেথির মধ্যে থিয়ামিন, ফলিক অ্যাসিড, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ভিটামিন-এ, এবং ভিটামিন-সি পরিপূর্ণ। মেথির মধ্যে নানারকম প্রয়োজনীয় মিনারেল রয়েছে। 

আজকে আমরা মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মেথির ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানব।

• মেথির পুষ্টিগুণ

এক চামচ মেথির বীজে পুষ্টিগুণ রয়েছে-
১. প্রোটিনঃ ৩ গ্রাম
২. ফ্যাটঃ ১ গ্রাম
৩. ফাইবারঃ ৩ গ্রাম
৪. ক্যালরিঃ ৩৫ ক্যালরি
৫. ম্যাগনেসিয়ামঃ ৫ শতাংশ
৬. লোহাঃ ২০ শতাংশ
৭. ম্যাঙ্গানিজঃ ৭ শতাংশ

• মেথির উপকারিতা

মেথির শুধুমাত্র রান্নাঘরে মসলা(spice) বা কোনো খাবার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়- আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে এবং রুপ ও চুলের চর্চায় মেথি বেশি পরিমাণে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন কাজে এই মেথি ব্যবহার করা হচ্ছে। তাহলে জেনে নিন কিভাবে মেথি আপনার প্রত্যাহিক জীবনে কাজে লাগতে পারে?

• স্বাস্থ্যে জন্য মেথির উপকারিতা:

১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেমেথির(fenugreek) বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং বিভিন্ন রকম উপাদান রয়েছে যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং শরীরের কার্বোহাইড্রেট আর সুগার শোষণ করে নেওয়ার নিয়ন্ত্রণে রাখে। মেথি খাওয়ায় ফলে শরীরের ইনসুলিন(Insulin) নিঃসরণের মাত্রা অনেকগুণ বেড়ে যায়। 

মেথি রক্তের ইউরিন এবং গ্লুকোজ মাএা কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। দিনে অন্তত একবার হলেও মেথির রস পান করলে ডায়বেটিস কমানো সম্ভব।

কিছু কিছু রিসার্চে দেখা গেছে যে, খাবারে সময় মেথি বিঁচি খেলে খাওয়ার পর পরেই টাইপ-2 ডায়বেটিস রোগিদের চিনির পরিমাণ কমে যায়। তাই, দৈনন্দিন জীবনে ১/২ বার (৫-৫০) গ্রাম মেথির বিঁচি খেলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, ২.৫ গ্রাম চেয়ে কম মাত্রায় গ্রহণ করলে কোনো কাজ করবে না। 

টাইপ-1 ডায়বেটিস জন্য দৈনিক ৫০ গ্রাম মেথি দুই বার গ্রহণ করলে তা প্রস্রাবে চিনির পরিমাণ কমিয়ে দেয়।

এছাড়াও লিভার থেকে সৃষ্ট তরলের শোষণের হার কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। চর্বিযুক্ত খাদ্য থেকে নির্গত হওয়া ট্রিগ্লাইসারাইড(Triglycerides)-এর শোষণের মাত্রা কমিয়ে দিতে সক্ষম মেথি।
৩. বাতের ব্যথা কমায়

বাতের ব্যথা প্রায় চল্লিশ বছরের উপরে মানুষেরই সমস্যা। Indian Journal of Medical Research এর প্রতিবেদনে অনুযায়ী, মেথির ইস্ট্রোজেনের উপরে প্রভাব এতই বেশি যে বর্তমানে ডাক্তারেরা মেথির ব্যবহার ”Estrogen replac Galactomannan” সাথে তুলনা করছেন। মেথি বাতের তীব্র ব্যথা-বেদনাকে কমাতে সাহায্য করে।
৪. হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা

হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষায় মেথি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মেথি শরীরে থেকে দ্রুত এসিডের পরিমাণ কমে দেয়। এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে করতে মেথি কার্যকরী ভেষজ।
মেথির বিচিঁ সারারাত জলে বা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটেই খেয়ে নিলে হার্টের ব্যথা বা বুক জ্বালা ও হার্টের বিভিন্ন সমস্যাগুলো ঔষুধ না খেয়েই ঘরোয়া পদ্ধতিতে কমে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
৫. মাসিকের ব্যথা থেকে মুক্তিপিরিয়ড(Period)- এর ব্যথা প্রায় মেয়েদের জীবনে বিভীষিকার মতনই এবং মাসের শেষ সপ্তাহগুলো মেজাজ বা মাথা খারাপ থাকা ও স্কুল-কলেজ মিস করার মতো ঘটনা প্রায়ই সব মেয়েদের জীবনে ঘটেছে। চিন্তা কোনো কারণ নেই- রান্নাঘরে মিলবে এর সুফল! মাসিকের প্রথম ৩ দিন (১৭০০-২৭০০) মিলিগ্রাম মেথির গুড়া গ্রহণ করা ও পরবর্তী দিনগুলোয় ৯০০ মিলিগ্রাম করে দৈনিক ৩ বার মেথির গুড়া খেলে মহিলাদের মাসিকের ব্যথা কমে যায়। 

বর্তমান সময়ে এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, মেথির ব্যবহার করার ফলে ক্যান্সার রোগ হবার আশঙ্কা কমে যায় । কর্কটরোগ থেকে মুক্তি পেতে ডাক্তাররা রান্নায় মেথি ব্যবহার করতে বলছেন।আবার মহিলাদের জন্য মেথি রান্নায় অবশ্যই মিশানো উচিত। 

ফলে মেথিতে উপস্থিত ট্রাইগ্লিসেরাইড এস্ট্রোজেন গ্রহণকারী মডিউলেটার এর মতো কাজ করে এবং ব্রেস্ট ক্যান্সার(Breast cancer) সৃষ্টিকারী কোষগুলোকে উদ্দীপিত করতে করতে একসময় পুরোপুরি ধ্বংস করে।
৮. বুকের দুধ উৎপাদনমেথিতে উপস্থিত ডায়োসজেনিন দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি করে।  সেই সাথে ভিটামিন, মিনারেল থাকায় মায়ের দুধের পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে দেয়। 
তাই, বাচ্চা জন্ম দেয়ার কিছু পরে মেথির ক্যাপসুল বা মেথির চা খেলে স্তনপান করানো নারীদের দুধের উৎপাদন বেড়ে যায় এবং বাচ্চা জন্ম দেওয়ার এক বা দুই দিন পরে মেথি খেলে দুধের পরিমাণ বেড়ে যায়। কিন্তু সব গবেষণায় এ রকমটা দেখা যায় না।
৯. ওজন কমায়ওজন কমাতে মেথির উপকারিতা অপরিসীম। মেথি দানা বা বিচিঁ হলো লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, ভিটামিন-বিC6, প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজের এক উৎস। মেথির অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট (anti-oxident) এবং Anti-inflammatory বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে।

মেথি বীজে এক ফাইবার থাকে যা ‘Galactomannan’ নামে সুপরিচিত এবং সহজে পানিতে গলে যায়। এই ফাইবারটি ওজন কমাতে সহযোগিতা করে। পাশাপাশি শরীরের মেটাবলিসম বৃদ্ধি করে, যার ফলে মেদ ঝরে যাওয়া এবং অন্য এডিপোশ টিস্যুর কার্যক্ষমতা কমে যায়। 

কিছু কিছু গবেষণায় দেখা যায় ৫০০ মিলিগ্রাম মেথি ৮ সপ্তাহ(week) ধরে খেলে শরীরে চর্বির পরিমাণ একেবারেই কমে যায়। 

২০১৫ সালের এক গবেষণায়, নয়জন Over weight কোরিয়ান মহিলা launch এর আগে শিম চা, মেথি চা, এবং প্লাসিবো চা পান করেছিল। পরে দেখা যায়, মেথি চা যারা পান করেছিলেন তারা কম ক্ষুধার্ত ছিল এবং পূর্ণ অনুভূব করেছিলেন। সুতরাং, ওজন কমানোর জন্য ডায়েট চার্টে মেথি রাখা।
১০. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণমেথির দানায় উচ্চ পটাসিয়াম এবং ফাইবার সামগ্রী উপস্থিতির কারণে রক্তচাপ কমে যায়। 
এক চামচ মেথি দানা জলের মধ্যে ২ মিনিটের জন্য ফুটিয়ে নিন, পরে ছেঁকে নিয়ে বীজগুলিকে একটি ব্লেন্ডারে দিয়ে বা পিষে এটিকে পেস্ট বানান এবং মেথির পেষ্টটাকে দিনে দুই বার খালি পেটে খেয়ে নিন। ২-৩ মাস অনুসরণ করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা সম্ভব।
১১. কিডনির কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়”Phytotherapy Research”– গবেষণা অনুযায়ী, ক্যালসিয়াম অক্সালেট জাতীয় কিডনির পাথর প্রতিরোধ করতে মেথিই সক্ষম। গবেষণার ফলাফলে দেখা গিয়েছে যে, মেথি খাওয়া প্রাণীগুলো কিডনির মধ্যে কম ক্যালসিফিকেশন হয়েছে।
১২. লিভার ক্ষমতা বাড়ায়”Biology and toxicology” গবেষণায় S. Cavierson বলেছেন, মেথি অ্যালকোহলযুক্ত ক্ষতির বিরুদ্ধে লিভারকে পুরোপুরি রক্ষা করে। দীর্ঘদিন অ্যালকোহল আসক্ত মানুষরা চর্বিযুক্ত লিভার ও ফাইব্রোসিস থাকে যা কোলাজেন সংশ্লেষণের মাধ্যমে একেবারে নির্মূল করা যায়। 

গবেষণায় দেখা যায় যে, মেথি খাওয়ার ফলে লিভারে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট(Anti-oxidant) এনজাইম গুলির ক্রিয়া-কলাপ বাড়ায়।
১৩. পাচন তন্ত্রবর্তমানে অতিরিক্ত ভেজাল খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের পাচক সিস্টেম ক্রমাগতভাবে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি পেটের বিভিন্ন রকম সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই, পাচন তন্ত্র ভালো রাখতে হলে দৈনিক মেথি খাবেন।
১৪. হৃদয় ভালো রাখেমেথি খাওয়ার ফলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে। তাই জ্ঞানী ব্যক্তি ও ডাক্তারা মেথি খাওয়ার পরামর্শ দেন। নিয়মিত মেথি সেবন করার ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়।

• ত্বকের জন্য মেথির উপকারিতা

ত্বকের পরিচর্যার জন্যও মেথি খু্বই প্রয়োজনীয়। মেথির বীজকে কিভাবে নিজের রূপচর্চার গোপন রহস্যকর বানিয়ে তুলবেন তা চটপট ভাবে জেনে নিন। 
১। মেথি ব্রণ নির্মূল করে:

মেথির বীজে উপস্থিত আছে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল পদার্থ, যা আপনার ব্রণ(acne) নির্মূল করতে সাহায্য করে। শুধুমাএ মেথির দানা আর গরম পানি ব্যবহার করে ব্রণ মুক্ত ত্বক পাওয়া যায়।
কিভাবে কাজ করে?

মেথির দানার ভিতরে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল পদার্থ থাকে, এটি ত্বকের গভীরে মধ্যে যায়। দীর্ঘদিন মেথি (methi) ব্যবহার করলে ব্রণের দাগের হাত থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া যায়।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?

১. পরিমাণমতো জল গরম করে তাতে মেথির    দানাগুলোকে ফেলে দিন।
২. মেথি গরম পানিতে ১৫ মিনিট ফুটিয়ে নিন।
৩. ঠাণ্ডা হওয়ার পরেই মেথির দানাগুলোর ভেজানো জল তুলো দিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন।

২। বার্ধক্য প্রতিরোধ করে:

বাজারচলতি Anti-aging ক্রিমগুলো ব্যবহার করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না? সমাধান লুকিয়ে আছে রান্নাঘরে আপনার মসলার কৌটোর মধ্যেই। 
কিভাবে কাজ করে?মেথির বীজ বা দানা ব্যবাহারের ফলে ত্বককে সজীব ও সুন্দর দেখায়।  ত্বকের মৃত কোষ তুলে দেবার ক্ষমতা রাখে মেথি। ফলে ত্বক তরুণ বা যৌবন ফিরে পায় ও ত্বক উজ্জ্বল দেখায়।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?১. মেথির গুঁড়ো
২. জল
৩. দই
৪. মেথির গুড়ো, জল ও দই একসাথে মিশাবেন। ৫. তারপর সারা মুখে ভালো করে মেথি বা methi পেস্ট লাগিয়ে নিবেন।
৬. ২০ মিনিট পর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
৭. সপ্তাহে ২ বার করে মেথির গুড়ো পেষ্ট ব্যবহার করুন। 
৩। মেথি ত্বকের শুকনো ভাব দূর করে:

শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় ভুগছেন তো? কোনো সমস্যা নেই, রান্নাঘরেই আছে এর সমস্যার সমাধান। শুধু চাই মধু,দই আর মেথি।  
কিভাবে কাজ করে?মেথির বীজে থাকা তেল যা ত্বকের জেল্লা আনতে সাহায্য করে। মেথির তেল আপনার ত্বকের সাথে মিশে শুষ্কতা দূর করে। অতএব যারা শুকনো, খসখসে, প্রাণহীন ত্বকের সমস্যাতে ভুগছেন তারা মেথির তেল ব্যবহার করে ত্বকের উজ্জ্বলতা নিয়ে আসতে পারেন।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?১. গরম জলের বা পানির মধ্যে সারারাত মেথির বীজ বা দানাগুলো ভিজিয়ে রাখুন।২. দুই চামচ দই আর ১ চামচ মধুর সাথে মেথির বীজ বা দানাগুলো মিশিয়ে ভালো করে বেটে পেস্ট মতো করুন।৩. মুখে মেথির পেস্ট লাগিয়ে ১৫ মিনিট ধরে রাখুন।৪. পানি (water) দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিবেন।৫. সপ্তাহে অন্তত একবার মেথির পেস্ট ব্যবহার করুন।

• চুলের জন্য মেথির উপকারিতা

মেথির উপকারিতা শুধু ত্বক আর স্বাস্থ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। মেথি ব্যবহারের ফলে একঝাক ঘনঘন কালো চুল পাওয়ার যায়।

১। মেথি চুল পড়া কমায়:

এই ধুলো-দূর্ষণের ফলে চুল (hair) ঝরে যাওয়ার সমস্যায় কম বা বেশি সকলেই ভোগেন। এইসব সমস্যা থেকে চুলকে রক্ষা করতেও মেথির ভূমিকা অপরিসীম। 
কিভাবে কাজ করে?মেথিতে ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি থাকে। যা  মাথার মধ্যে টাকের সমস্যা থেকে বাঁচায়। লিথিসিন (Lithisin) নামক পদার্থ যা আমাদের চুলে থাকে। ফলে চুল পড়ার সমস্যা থেকে বাঁচায়। সুতরাং, মেথি দিয়ে তৈরি চুলের মাস্ক ব্যবহার করলে লিথিসিন তৈরি হয় যা চুল বা hair মজবুত এবং ঘন করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?১. মেথির দানার গুঁড়ো- ১ চামচ।

২. জল

৩. পানির মধ্যেই মেথির দানার গুঁড়ো(powder) মিশান।
৪. মেথির পেস্ট সারা মাথায় বা চুলের গোড়া থেকে  আগায় লাগিয়ে দিন।
৫. চুলে মেথির লাগানো পেস্ট ২০ মিনিট ধরে রেখে দিয়ে ভালো করে জল বা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৬. সপ্তাহে একবার এই পেস্ট ব্যবহার করলেই চুল(hair) হয়ে উঠবে ঘন, সুন্দর ও উজ্জ্বল।

২। মেথি খুশকি কমায়:

খুশকির সমস্যা হলে শরীরের অস্বাস্থ্যকর অনুভূতি সৃষ্টি হয়। সুতরাং এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মেথি অবশ্যই অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।
কিভাবে কাজ করে?মেথির দানার গুঁড়ো আর জলের পেস্ট খুশকি সমস্যার মুক্তি দিতে একাই যথেষ্ট। মেথির (methi) পেস্ট চুলকে গোড়া থেকে শক্ত এবং খুশকি থেকে মুক্তি দেয়।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?১. মেথির গুঁড়ো ১/২ কাপ
২. জল বা পানি
৩. লেবুর রস
৪. মেথির গুঁড়ো, জল এবং লেবুর রস একসাথে মিশান।
৫. থকথকে পেস্ট বানান।
৬. মাথার আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ১০/১৫ মিনিট মতো লাগিয়ে রেখে দিন।
৭. মাথা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৩। মেথি চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়:

আপনার কি চুলের উজ্জ্বলতা কমে গিয়েছে।আপনি ভাবছেন বিউটি পার্লারে স্পে করে চুলের হারানো সেই জেল্লা ফিরিয়ে আনবেন। কিন্তু আপনার সেই রান্নাঘরে তো সমাধান আছে। ব্যবহার করুন মেথির দানার আর দেখুন কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের উজ্জ্বলতা ও সৌদর্য ফিরিয়ে আনা যায়।
কিভাবে কাজ করে?মেথিতে থাকা ভিটামিন-ই যা চুলের ও নখের জন্য খুবই উপকারী। মেথির ভিতরে প্রাকৃতিকভাবে জেলোটিন পাওয়া যায় যা চুলের জেল্লা আর চুলের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?১. মেথি গুড়ো ২ চামচ
২. পরিমাণমতো গরম জল বা পানি
৩. মেথির দানাগুলো গরম জলের মধ্যে ফেলে দিন।
৪. ভালো করে জল ফুটিয়ে ঘন পেস্ট তৈরী করুন।
৫. মাথায় ২৫-৩০ মিনিট রেখে দিন।
৬. হালকা শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
৭. সপ্তাহে কমপক্ষে ২ বার মেথির পেস্ট ব্যবহার করুন। 

চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায

আপনার কি চুলের উজ্জ্বলতা কমে গিয়েছে।আপনি ভাবছেন বিউটি পার্লারে স্পে করে চুলের হারানো সেই জেল্লা ফিরিয়ে আনবেন। কিন্তু আপনার সেই রান্নাঘরে তো সমাধান আছে। ব্যবহার করুন মেথির দানার আর দেখুন কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের উজ্জ্বলতা ও সৌদর্য ফিরিয়ে আনা যায়।
কিভাবে কাজ করে?

মেথিতে থাকা ভিটামিন-ই যা চুলের ও নখের জন্য খুবই উপকারী। মেথির ভিতরে প্রাকৃতিকভাবে জেলোটিন পাওয়া যায় যা চুলের জেল্লা আর চুলের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?

১. মেথি গুড়ো ২ চামচ
২. পরিমাণমতো গরম জল বা পানি
৩. মেথির দানাগুলো গরম জলের মধ্যে ফেলে দিন।
৪. ভালো করে জল ফুটিয়ে ঘন পেস্ট তৈরী করুন।
৫. মাথায় ২৫-৩০ মিনিট রেখে দিন।
৬. হালকা শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
৭. সপ্তাহে কমপক্ষে ২ বার মেথির পেস্ট ব্যবহার করুন।

 ৪। মেথি চুলকে অকালপক্কতা দূর করে:

মেথি চুল পেকে যাওয়া দূর করে 

অকালে চুল পেকে যাওয়ার হাত থেকে মেথি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক বাটি মেথিও হতে পারে আপনার মুশকিল এই সমস্যার অস্ত্র।
কিভাবে কাজ করে?মেলানিন চুলের(hair) কালো রঙের জন্য দায়ী। মেথির(fenugreek) দানার গুঁড়ো যা মেলানিন উৎপাদনে সক্ষম।  
কিভাবে ব্যবহার করবেন?

১. মেথির বীজের গুঁড়ো ১ চামচ
২. আমলকির গুঁড়ো
৩. জল বা পানি
৪. মেথির বীজের গুঁড়ো এবং আমলকির গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন।
৫. থকথকে পেস্টে জল যোগ করে নিন।
৬. চুলের গোড়া থেকে আগা অবধি লাগিয়ে নিন।
৭. ২০ মিনিটের মতো রেখে নিয়ে চুল ধুয়ে দিন।

মেথি খাওয়ার নিয়ম:

১ গ্লাস গরম জলে মেথি দানা ভিজিয়ে রেখে ১০ মিনিট থিতিয়ে যাওয়ার সময় দিন। এরপর লেবু ও মধু মিশিয়ে তরলটি পান করুন। রুটি, পরোটা, দোসা, ইডলি, রান্নার ঝোল, সালাদ আর মাছ ভাজাতেও মেথি পাতা দিয়ে রান্না করতে পারেন। স্বাদেও ভালো হবে, আর অনেক বেশি উপকার মিলবে।

• মেথির ব্যবহার

১। শারীরিক বিকাশেমেথির জল বা পানি ও মেথি শাক রান্নায় ব্যবহার করলে আপনার শারীরিক সুস্থতার জন্য বেড়ে যায়। আয়ুর্বেদী শাস্ত্র অনুযায়ী, মেথি হলো সুষম ভেষজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মেথি খেলে শরীরের সব দিক থেকে অনেক অনেক ভালো থাকবে। 
২। ত্বক ও চুলের সার্বিক উন্নয়নেচুলের বৃদ্ধি আর ত্বকের পরিচর্যা আমরা কেমিক্যাল বা ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহার করি। এর চেয়ে এই সমস্যার সমাধান করবার জন্যেও মেথির জুড়ি মেলা ভার। ত্বকের আর চুলের প্যাক হিসেবে মেথি ব্যবহার করলে আপনার রূপচর্চা ও সৌদর্য সম্পূর্ণ হবে। 
৩। শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতেশরীরের ভিতরে সোডিয়াম, পটাসিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ মৌল থাকে। এগুলো একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় মানুষের দেহে থাকা প্রয়োজন। বয়স বাড়ার সাথে এই মাত্রাগুলিও বদলে যেতেই থাকে। আমরা সকলেই বার্ধক্যজনিত রোগের কথা শুনেছি। এইসব মৌল বা পদার্থ মাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে মেথির ভূমিকা অপরিসীম।

• মেথির অপকারিতা 

সবারই কিছু ক্ষতিকর দিক থাকে। এবার জানা যাক মেথির অপকারিতা দিকগুলো:
১। মুখে মধ্যে মেথির (methi) দানার গুঁড়ো গেলে তেতোঁ বা Bitter ভাব সৃষ্টি হয়। ফলে অনেকের বমি বমি ভাব লাগে বা মাথা ঘোরার ভাব সৃষ্টি হয়।
২। মেথির ব্যবহারে ব্লাড (blood)  সুগারের পরিমাণ হঠাৎ কমে যেতে পারে।
৩. দীর্ঘদিন মেথি খাওয়ার ফলে শরীর থেকে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।
৪। কৌমারীন থাকার জন্য মেথির দানা রক্তের জমাট বাঁধার ক্ষেত্রে প্রধাণ অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। যাদের রক্ত পাতলা তাদের মেথি নিয়মিত ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া বাঞ্চনীয়।৫। গর্ভবতী মহিলারা মেথির দানা ভেজানো জল দীর্ঘদিন ধরে খেলে সময়ের আগেই শিশুর জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এমনকি গর্ভপাতের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।সুতরাং, মেথি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলেন। ফলে মেথির এই ব্যবহারগুলি আপনার অবশ্যই কাজে আসবে এবং এগুলি আপনি দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করবেন। 
আমাদের জানাবেন মেথির কোন ব্যবহার আপনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয়েছে, কমেন্টবক্সে মধ্যে  comment করতে ভুলবেন না।

https://drive.google.com/file/d/1r9VAPwceSDfXVMIEqBf0qir-hjE7La/view?usp=drivesdk

About the Author: Nazmul Hossain

আমি নাজমুল । আমি বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা তে বসবাস করি। বর্তমানে আমি চাকরী করছি। আমার চাকরী পাশাপাশি আমি অনলাইনে লেখা লেখি করতে পছন্দ করি। বিশেষ করে টেকনোলোজি বিষয়ে লেখা লেখি করতে আমার ভাল লাগে। তাই আপনাদের জন্য আমি এই ওয়েবসাইট টি তৈরি করেছি। এখানে আপনি বাংলাদেশের অনালাইন সম্পর্কিত প্রায় সকল ধরনের তথ্য খুজে পাবেন। ধন্যবাদ।

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *