বাংলাদেশের নতুন টাকা ছবি ছয়টি Bangladesh taka Notun chobi।নতুন ডিজাইনের ছয়টি নোটের ছবি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নোটগুলোর মধ্যে রয়েছে- ৫০০, ২০০, ১০০ ও ১০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোট এবং ৫ ও ২ টাকা মূল্যমান কারেন্সি নোট। এসব নোটে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীকগুলোকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিটি নোটে রয়েছে নতুন গভর্নর আহসান হাবিব মনসুরের স্বাক্ষর। নতুন নোটে উন্নত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয়েছে, যা নকল প্রতিরোধে সহায়ক হবে। তবে পুরোনো নোটও চলবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তআমি বাংলাদেশের টাকা সম্পর্কে কিছু সাধারণ তথ্য অনুসন্ধান করতে পারি। আমি নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জানতে চাইতে পারি:
- বাংলাদেশের টাকার ইতিহাস কী?
- বাংলাদেশের বর্তমানে প্রচলিত টাকার নোট ও কয়েনগুলো কী কী?
- বাংলাদেশের টাকায় কী কী নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে?
- বাংলাদেশ ব্যাংক কীভাবে টাকা ইস্যু করে?
আপনার সুবিধার জন্য, আমি কিছু অনুসন্ধান ক্যোয়ারী তৈরি করছি যা আপনাকে বাংলাদেশের টাকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে সাহায্য করবে।
আপনার আগ্রহের বিষয় “বাংলাদেশের টাকা” একটি বিশাল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি আপনার সুবিধার জন্য এটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিচ্ছি:
বাংলাদেশের টাকা: একটি বিস্তারিত বিবরণ
বাংলাদেশের মুদ্রা হলো টাকা (৳)। এটি বাংলাদেশের অর্থব্যবস্থার প্রাণ এবং অর্থনৈতিক কার্যকলাপের মূল ভিত্তি। বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে টাকা ইস্যু ও পরিচালনা করে।
১. টাকার ইতিহাস
বাংলাদেশের টাকার ইতিহাস স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
- স্বাধীনতার পূর্বে: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এ অঞ্চলে পাকিস্তানি রুপি প্রচলিত ছিল।
- ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ: সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব মুদ্রার নাম “টাকা” ঘোষণা করে এবং এর প্রতীক ৳ নির্ধারণ করে। এই সময় ১, ৫, ১০ এবং ১০০ টাকার নোট প্রথম ইস্যু করা হয়।
- পর্যায়ক্রমিক নোট প্রবর্তন:
- ১৯৭৫ সালে ৫০ টাকার নোট।
- ১৯৭৭ সালে ৫০০ টাকার নোট।
- ১৯৮০ সালে ২০ টাকার নোট।
- ১৯৮৯ সালে ২ টাকার নোট।
- ২০০৮ সালে ১০০০ টাকার নোট।
- ২০২০ সালের ১৭ মার্চ তারিখে (বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে) ২০০ টাকার নোট প্রবর্তন করা হয়।
টাকার মূল্যমানের ১০০ ভাগের এক ভাগকে “পয়সা” বলা হয়।
২. বর্তমানে প্রচলিত টাকার নোট ও কয়েন
বাংলাদেশে দুই ধরনের কাগুজে মুদ্রা প্রচলিত আছে:
- সরকারি নোট: ১ ও ২ টাকার নোট, যা অর্থ মন্ত্রণালয় ইস্যু করে এবং এতে অর্থ সচিবের স্বাক্ষর থাকে।
- ব্যাংক নোট: ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট, যা বাংলাদেশ ব্যাংক ইস্যু করে এবং এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের স্বাক্ষর থাকে।
সম্প্রতি (২০২৫ সালের জুন মাস থেকে) বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন ডিজাইনের কিছু নোট বাজারে ছেড়েছে বা ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই নতুন ডিজাইনগুলোতে আধুনিক নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীকগুলোকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
কিছু সাম্প্রতিক প্রকাশিত বা ঘোষিত নতুন নোটের নকশার বিবরণ (২০২৫ সালের জুন মাসের তথ্য অনুযায়ী):
- ৫০০ টাকার নোট: সামনের দিকে বামপাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ছবি ও মাঝখানে শাপলার ছবি, পেছনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ছবি। (সবুজ রঙের আধিক্য)
- ২০০ টাকার নোট: সামনের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা এবং শাপলার ছবি, পেছনে জুলাই ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের আঁকা একটি গ্রাফিতির ছবি। (হলুদ রঙের আধিক্য)
- ১০০ টাকার নোট: সামনের দিকে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি, পেছনে সুন্দরবনের ছবি। (নীল রঙের আধিক্য)
- ৫০ টাকার নোট: (মার্চ ২০২৫ এ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী)
- ২০ টাকার নোট: (মার্চ ২০২৫ এ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী)
- ১০ টাকার নোট: (গোলাপি রঙের আধিক্য)
- ৫ টাকার নোট: (কারেন্সি নোট, অর্থ সচিব স্বাক্ষরিত)
- ২ টাকার নোট: (কারেন্সি নোট, অর্থ সচিব স্বাক্ষরিত)
- ১০০০ টাকার নোট: (মার্চ ২০২৫ এ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী)
কয়েন (ধাতব মুদ্রা): বাংলাদেশে ১, ২ এবং ৫ টাকার কয়েন প্রচলিত আছে। এছাড়াও কিছু পুরোনো ১০, ২৫, ৫০ পয়সার কয়েন থাকলেও সেগুলোর প্রচলন খুবই সীমিত।
৩. টাকার নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য
জাল নোট প্রতিরোধে বাংলাদেশি ব্যাংকনোটগুলোতে বিভিন্ন উন্নত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয়েছে। এই বৈশিষ্ট্যগুলো নকল করা কঠিন এবং আসল নোট চিনতে সাহায্য করে। প্রধান কিছু বৈশিষ্ট্য হলো:
- নিরাপত্তা সুতা (Security Thread): বিভিন্ন মূল্যমানের নোটে বিভিন্ন চওড়ার নিরাপত্তা সুতা থাকে। এটি আলোতে ধরলে বা নাড়াচাড়া করলে রঙ পরিবর্তন করে (যেমন লাল থেকে সবুজ, সোনালী থেকে সবুজ)। সুতার উপর বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং নোটের মূল্যমান মুদ্রিত থাকে।
- জলছাপ (Watermark): প্রতিটি নোটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির জলছাপ থাকে। এছাড়া, প্রতিকৃতির নিচে বা পাশে নোটের মূল্যমান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রামের ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপ থাকে।
- রং পরিবর্তনশীল কালি (Optically Variable Ink – OVI): নোটের নির্দিষ্ট অংশে ব্যবহৃত কালি আলোতে বিভিন্ন কোণ থেকে দেখলে রঙ পরিবর্তন করে (যেমন সোনালী থেকে সবুজ, মেজেন্টা থেকে সবুজ)।
- লুকানো ছাপা (Latent Image): নোটের কিছু অংশে লুকানো লেখা বা সংখ্যা থাকে যা নির্দিষ্ট কোণ থেকে দেখলে বা নোটটি অনুভূমিকভাবে ধরলে দেখা যায়।
- অতি সূক্ষ্ম আকারের লেখা (Microprint): নোটের ডিজাইনের কিছু অংশে খালি চোখে প্রায় অদৃশ্য অতি সূক্ষ্ম আকারের লেখা থাকে, যা আতশী কাঁচ বা স্মার্টফোনের ক্যামেরার সাহায্যে জুম করে দেখা যায়।
- অসমতল ছাপা (Intaglio Print): নোটের কিছু ডিজাইন যেমন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, নোটের বর্ডার, মূল্যমান ইত্যাদি স্পর্শ করলে উঁচু-নিচু অনুভূত হয়। এটি হাতের স্পর্শে অনুভব করা যায়।
- অন্ধদের জন্য বিন্দু/লাইন (Tactile Features for Visually Impaired): কিছু উচ্চ মূল্যমানের নোটে অন্ধদের জন্য ছোট ছোট উঁচু বিন্দু বা লাইন থাকে, যা স্পর্শ করে নোটের মূল্যমান শনাক্ত করা যায়।
- বিভিন্ন রঙের ফাইবার: নোটের কাগজে ছোট ছোট রঙিন ফাইবার থাকে যা সাধারণ আলোতে দেখা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিতভাবে এই নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করে থাকে।
৪. বাংলাদেশ ব্যাংক কীভাবে টাকা ইস্যু করে?
বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে দেশের মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও পরিচালনা করে। টাকা ইস্যু করার ক্ষেত্রে এর কয়েকটি প্রধান দায়িত্ব রয়েছে:
- মুদ্রা ছাপানো ও প্রচলন: বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারের পক্ষে, দেশের চাহিদা অনুযায়ী কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রা ছাপানোর ব্যবস্থা করে এবং বাজারে প্রচলন করে। সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড (SPCBL) এই নোটগুলো ছাপানোর কাজটি করে থাকে।
- মুদ্রার চাহিদা নির্ধারণ: দেশের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ, মুদ্রাস্ফীতি, পুরাতন নোটের অচল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি বিবেচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নোটের প্রয়োজনীয়তা ও পরিমাণ নির্ধারণ করে। এটি বাজারের অর্থের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে যাতে মূল্যস্ফীতি না ঘটে।
- পুরাতন নোট প্রতিস্থাপন: ব্যবহারের কারণে অচল বা ক্ষতিগ্রস্ত নোটগুলো বাজার থেকে তুলে নিয়ে নতুন নোট দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়।
- বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ: বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল সংরক্ষণ করে এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার বিনিময় হার নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশের নতুন টাকা ছবি ছয়টি

সংক্ষেপে, বাংলাদেশের টাকা শুধু একটি বিনিময়ের মাধ্যম নয়, এটি দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতিরও প্রতিচ্ছবি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই মুদ্রার স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।
যদি আপনার বাংলাদেশের টাকা সম্পর্কে আরও নির্দিষ্ট কোনো প্রশ্ন থাকে, যেমন কোনো নির্দিষ্ট নোটের ছবি বা আরও গভীর কোনো তথ্য, তবে আমাকে জানাতে পারেন।