ক্যাশ সার্ভার কি সেটা বুঝার জন্য আগে একটা ছোট্ট কাহিনি শুনা প্রয়োজন।
আচ্ছা মনে করেন আপনার ঘরে একটা বুকশেলফ আছে যেখানে অনেক বই রাখা আছে আবার আপনার ঘরে একটা ছোট্ট টেবিল আছে যে টেবিলে অনেক গুলা ড্রয়ার আছে।
আপনি কোন নির্দিষ্ট বই পড়ার শুরুতে বইটা বুকশেলফ থেকে টেবিলে নিয়ে এসে টেবিলে বসে পড়েন এবং প্রতিদিন কিছু অংশ করে পড়ে বই টিকে ড্রয়ারে রাখেন।এভাবে বইটা পুরো পড়া শেষ হয়ে গেলে সেটিকে আবার বুকশেলফ এ রেখে আসেন। এখন মনে করেন অনেক গুলা বই আছে যেগুলা আপনার প্রায় প্রতিদিনি দরকার হয় যেমন পাঠ্য বই হতে পারে। তাহলে কি আপনি এই বই গুলাকে বার বার বুকশেলফ এ রেখে আসবেন? অবশ্যই না।পড়া শেষে আপনি সুন্দর করে গুজিয়ে ড্রয়ারে রাখবেন যেন টেবিলট পরিপাটি থাকে।
এখন এই ঘটনা দ্বারা ক্যাশ সার্ভারের ব্যাখ্যা দেওয়া যায়। এই ক্ষেত্রে বুকশেলফটা হল গুগল,ফেসবুক,ইউটিউব ইত্যাদি এর মত কোম্পানি গুলোর মেইন সার্ভার বা ডাটা সেন্টার যেখানে কোটি কোটি ডাটা স্টোর করা আছে এটি মূলত অ্যামেরিকাতে অবস্থিত । টেবিলটা হল ব্যান্ডউইথ অর্থাৎ এই যে ৫ এম্বি ,১০এম্বি পার সেকেন্ড বলে এগুলাকে ব্যান্ডউইথ বলে। আর ড্রয়ারটা হল ক্যাশ সার্ভার।
8h
এখন মনে করেন কিছুদিন পরে আপনি আগের টেবিলটিকে চেঞ্জ করে নতুন একটা টেবিল কিনে আনলেন যার কোন ড্রয়ার নাই। তাহলে কি হবে? তাহলে আপনার সব বই গুলাকেই টেবিলে রাখা লাগবে । কিন্তু এত গুলা বই কে একসাথে টেবিলে রাখলে টেবিলে জাগয়ার অভাব হবে পাশাপাশি টেবিলে চাপ বাড়বে ও অগুজালো হবে । আর তা না হলে আপনার বই গুলাকে বুকশেলফ এ বার বার রেখে আসতে হবে।এতে এক দিকে যেমন সময় লাগবে তেমনি বিরক্তও।
তাহলে কি করা যেতে পারে? আর সেটা হল সেই ছোট্ট টেবিলের সাইজ বাড়াতে হবে। আর সাইজ বাড়ানো মানে আপনাকে ব্যান্ডউইথ বাড়াতে হবে ।
আমরা ফেসবুক ,গুগোল ,ইউটিউবের যে ডাটা গুলা নিই বা ভিডিও গুলা দেখি সেগুলা এসব গুলা সেই কোম্পানির ডাটা সেন্টারে অবস্থিত। এই ডাটা সেন্টার গুলা প্রধানত অ্যামেরিকায় আছে যা আমাদের দেশ থেকে অনেক দূরে।
আমরা যদি এই সাইট গুলো থেকে কোন ডাটা পেতে চাই বা কোন ভিডিও দেখতে চাই তাহলে এই কাঙ্খিত ডাটা গুলো সেই সব ডাটা সেন্টার থেকে সূদুর পথ পাড়ি দিয়ে আমাদের কম্পিউটারে আসে।
এখন আমরা যদি আমাদের ব্যাবহার করা সেই ডাটা গুলাকে বার বার পেতে চাই তাহলে আমাদের এই পূর্ব ব্যাবহৃত ডাটা গুলাকে এত সূদুর পথ পাড়ি দিয়ে আমাদের কম্পিউটারে বার বার আসতে হয় যা অনেক সময় সাপেক্ষ।
তাই এই সব কোম্পানি গুলা বিভিন্ন দেশে ক্যাশ সার্ভার বানিয়েছে যা সেখানকার মানুষের প্রথম বার ব্যাবহার করা ডাটা গুলাকে স্টোর করে রাখে যেন সেখানকার মানুষ এই সব সার্ভার থেকে সমসাময়িক পূর্ব ব্যাবহৃত ডেটা গুলোকে যদি আবার চাই তাহলে যেন খুব সহজেই ও দ্রুত পেতে পারে।ক্যাশ সার্ভার মূলত একটি ডেডিকেটেড নেটওয়ার্ক সার্ভার বা সার্ভারের মধ্যে একটি পরিষেবা যা ওয়েব পৃষ্ঠাগুলি এবং অন্যান্য ফাইলগুলিকে ক্যাশ বা স্টোর করে।যা ব্যাবহারকারীর পূর্বে পুনরুদ্ধার করা তথ্যের অ্যাক্সেসকে গতি দেয় । ক্যাশে সার্ভারগুলি স্ট্যাটিক ডেটা সঞ্চয় করতে ব্যবহৃত হয় যেমন চিত্রগুলি যা প্রায়শই পরিবর্তন হয় না ।
এখন এই সার্ভার না থাকলে কি হবে?তাহলে বার বার সেই আগের ডেটা প্রাপ্তির জন্য মেইন সার্ভার থেকে ডেটা আনা লাগবে এবং কম ব্যান্ডউইথ এ ডেটা গুলাকে পাওয়া যাবে না ।আর পাওয়া গেলেও অনেক সময় লাগবে।তাই ব্যান্ডউইথ বাড়াতে হবে।তখন দেখা যাচ্ছে যে ভিডিও ৫ এম্বি পার সেকেন্ড ব্যান্ডউইথ এ দেখা যেত তা দেখতে ১০ এম্বি পার সেকেন্ড ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন পড়ছে আবার দেখা গেলেও বাফারিং হচ্ছে কারন আপনার সেই ডাটা বা ভিডিও বা ছবি এখন সরাসরি মেইন ডাটা সেন্টার থেকে আসছে যা একদিকে যেমন সময়সাপেক্ষ আবার ব্যায়বহুল ও বটে।