১০৪ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়

১০৪ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়:

১০৪ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়

জ্বর হঠাৎ করেই এবং খুব সহজে একজন থেকে অন্যজনে ছড়ায়। পরিবারের একজনের হলে বাকিদেরও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এই জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে ১০২ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। সারা শরীর কামড়াতে থাকে। বমি হয়, সেইসঙ্গে সর্দি ও হাঁচি থাকে। চোখ লাল হয়ে যায়। এসব উপসর্গ থাকলে মোটামুটি ধরে নেওয়া যেতে পারে রোগীর ভাইরাল ফিভার হয়েছে।

১০৪ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়

প্রথম ধাপ: জ্বর দেখা দিলে অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে একটি কক্ষে নিজেকে আবদ্ধ করে ফেলতে হবে। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, হাঁচি-কাশি থাকলে রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। রোগীর কক্ষে প্রবেশ করলে অবশ্যই মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপ: চিকিৎসকের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে। এ ছাড়া সরকারের কিছু হটলাইন নম্বর আছে, সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন। চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে এবং ওষুধ সেবন করতে হবে।

তৃতীয় ধাপ: রোগীর সুষম খাবার নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যেন থাকে ফলমূল, শাকসবজি, মাছ-মাংস, ডিম ও দুধ। বিশেষ করে ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ ফল খেতে হবে।

চতুর্থ ধাপ: প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার পর্যন্ত তরল পান করতে হবে। ডেঙ্গু, করোনা অথবা যেকোনো জ্বরে পানীয় পান করাটা খুবই জরুরি।

পঞ্চম ধাপ: রোগীকে কিছু সতর্কসংকেত সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে। এসব সতর্কসংকেত হলো তীব্র শ্বাসকষ্ট, তীব্র বুকব্যথা, অস্বাভাবিক দুর্বলতা, অসংলগ্ন কথা, পালস অক্সিমিটারে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৪-এর নিচে চলে আসা, অনবরত বমি, তীব্র পেটব্যথা অথবা মুখ, নাক ও দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ। এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে অথবা হাসপাতালে যেতে হবে।

অনেকে জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাওয়া শুরু করে দেন। মনে রাখতে হবে, কিছুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো পদক্ষেপ নেওয়া চলবে না। কোনো প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হবেন না।

ডা. নওসাবাহ নূর, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, পপুলার মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

কী করবেন

ভাইরাস জ্বরে শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকলে রোগীর সারা শরীর স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে ভেজানো তোয়ালে চিপে, তা দিয়ে মুছে দিতে হবে। এভাবে কয়েকবার করলে শরীরের তাপমাত্রা কম আসবে। মাথায় পানি দেওয়া যেতে পারে। গায়ে কোনো বাড়তি কাঁথা দেওয়ার দরকার নেই। জ্বর না কমলে সামান্য কিছু খেয়ে নিয়ে একটি প্যারাসিটামল ট্যাবলেট/ সিরাপ দেওয়া যেতে পারে। তবে তা অবশ্যই খাওয়ার পর খাওয়ানো উচিত।

জ্বর খুব বেশি হলে, ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে হলে বড়দের ডাইক্লোফেন/ ক্লোফেনাক সাপোজিটরি একটি এবং বাচ্চাদের এপিএ সাপোজিটরি ১২৫ অথবা ২৫০ মিগ্রা বয়স অনুযায়ী একটি পায়খানার রাস্তায় দেওয়া যেতে পারে। সর্দির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ট্যাবলেট বা সিরাপ যথাযথভাবে দিতে হবে। অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ট্যাবলেটের মধ্যে রয়েছে এক্সিপিলিন/ হিস্টাসিন/ হিস্টালেক্স/ অ্যান্টিসটা ইত্যাদি।

এগুলোর একটি করে ট্যাবলেট দিনে তিনবার দেওয়া যেতে পারে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একই নামের সিরাপ এক চা চামচ করে দিনে তিনবার সেবন করানো যেতে পারে। খুব বেশি বমি হলে এর জন্য তাৎক্ষণিকভাবে মোটিলন/ এভোমিন একটি এবং বমি বন্ধ না হলে একটি করে দিনে তিনবার খাওয়ানো যেতে পারে।

এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পানীয় ও ফল, যেমন : কমলালেবু, আমলকী, আনারস ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। দিনে দুই থেকে তিন কাপ কমলালেবুর রস খেলে ভালো। পরিবর্তে ভিটামিন সি ট্যাবলেট একটা করে দিনে চার থেকে পাঁচবার খেতে পারেন। সব ধরনের স্বাভাবিক খাবারই তখন খাওয়া যাবে।

দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে এই জ্বর এমনিতেই সেরে যায়।

কী করবেন না

ভাইরাস জ্বর হলে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার দরকার নেই। তিন থেকে চার দিনের মধ্যে জ্বর ভালো না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এ সময়ে খাবার-দাবার বন্ধ করা চলবে না। বদ্ধ ঘরে থাকবেন না। ছোঁয়াচে বলে অন্যদের থেকে পৃথক থাকার চেষ্টা করুন।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

Posts created 2321

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts

Begin typing your search term above and press enter to search. Press ESC to cancel.

Back To Top
(Official) Jhumka Jhule Kane Haay Song Lyrics ঝুমকা ঝুলে কানে হায় লিরিক্স shab e barat 2023 namaj koto rakat Xiaomi Bangladesh realme narzo 50i prime,Review,Processor,Picture,black,gsmarena,wallpaper,price in bangladesh World Refugee Day 2022: When did it begin? What is the theme of the year?