তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম – বাংলা উচ্চারণ সহ নিয়ত, দোয়া মিজানুর রহমান আজহারী

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম – বাংলা উচ্চারণ সহ নিয়ত, দোয়া মিজানুর রহমান আজহারী।Tahajjud niyat bangla তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত ও নিয়ম বাংলায়

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় ভাই ও বোন কেমন আসেন। আবু হোরায়রা রা: থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছেঃ “আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি। আফজালুস সালাতি বাদাল মাফরুদাতি সালাতুল লাইলি’ অর্থাৎ ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ।” – (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ)

তাহাজ্জুদ নামাজ‌ কি?

তাহাজ্জুদ (আরবি: تهجد‎‎), রাতের নামাজ বা কিয়ামুল লাইল নামেও পরিচিত, ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্যে একটি ঐচ্ছিক ইবাদত। এটা বাধ্যতামূলক পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের অন্তর্ভুক্ত নয়। ইসলামের নবী মুহাম্মদ(সঃ) নিয়মিত তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন এবং তার সাহাবীদের এটা পালনে উৎসাহিত করতেন।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত বাংলা উচ্চারণ সহ নিম্নে দেওয়া হলঃ-

অর্থঃ “আমি আল্লাহর ওয়াস্তে কেবলার দিকে মুখ করিয়া তাহাজ্জুদের দু-রাকআত নফল নামাজের নিয়ত করিলাম। আল্লাহু আকবার।”

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

ইশার নামাজ আদায়ের পর থেকে শুরু করে সুবহে সাদেকের আগ পর্যন্ত সালাতুল লাইল বা তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া যায়। তবে অর্ধ রাতের পর থেকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ভালো। তবে শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা সর্বোত্তম।

তাহাজ্জুদ নামাজের ওয়াক্ত এবং রাকাআত

ইশার নামাজ আদায়ের পর থেকে সুবহে সাদেকের আগ পর্যন্ত সালাতুল লাইল বা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যায়। কুরআনে রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদের যে তাকীদ করা হয়েছে তার মর্ম এই যে, রাতের কিছু অংশ ঘুমিয়ে থাকার পর উঠে নামায পড়া। তাহাজ্জুদের সর্বোত্তম সময় এই যে, এশার নামাযের পর লোকেরা ঘুমাবে। তারপর অর্ধেক রাতের পর উঠে নামায পড়বে। নবী (সাঃ) কখনো মধ্য রাতে, কখনো তার কিছু আগে অথবা পরে ঘুম থেকে উঠতেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে সূরা আলে-ইমরানের শেষ রুকুর কয়েক আয়াত পড়তেন। তারপর মেসওয়াক ও অযু করে নামায পড়তেন।

তাহাজ্জুদের নামাজ ২ থেকে ১২ রাকাআত পর্যন্ত পড়ার বর্ণনা পাওযা যায়। অর্থাৎ, সর্ব নিম্ন ২ রাকাআত আর সর্বোচ্চ ১২ রাকাআত পড়া যেতে পারে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়তেন। তাই ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়াই ভালো। তবে এটা আবশ্যক নয়। তাহাজ্জুদের নামাজের কোনো কাজা নেই।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম মিজানুর রহমান আজহারী

তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার নিয়ম

এখানে আমরা তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম নিয়ে জানব ইনশাআল্লাহ। তাহাজ্জুদ একটি নফল ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাহাজ্জুদ নামাজ দুই রাকাত দুই রাকাত করে আদায় করতেন। তিনি কখনো ৪ রাকাত, কখনো ৮ রাকাত এবং কখনো ১২ রাকাত পড়েছিলেন। কিন্তু কেউ যদি এ নামাজ ২ রাকাত আদায় করেন, তাহলেও তার তাহাজ্জুদ আদায় হবে।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি এশার পর দুই বা ততোধিক রাকাত নামাজ পড়ে নেয়, সে হবে তাহাজ্জুদের ফজিলতের অধিকারী।”

যে কোনো সুরা দিয়েই এ নামাজ পড়া যায়। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যথাসম্ভব লম্বা কেরাত, লম্বা রুকু ও সেজদা সহকারে একান্ত নিবিষ্ট মনে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা উত্তম। কেরাত উঁচু বা নিচু উভয় আওয়াজে পড়া জায়েজ আছে। তবে উচু স্বরে পড়া যদি কারও কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তবে চুপিচুপি পড়া কর্তব্য।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়মঃ

– তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নিয়ত বাঁধা।
– অতঃপর ছানা পড়া।
– সুরা ফাতেহা পড়া।
– অন্য সূরা বা সূরার অংশবিশেষ বা কেরাত পড়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক লম্বা কেরাত পড়তেন। অতঃপর অন্যান্য নামাজের ন্যায় রুকু, সেজদা আদায় করা। এভাবেই দ্বিতীয় রাকাআত আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ ও দোয়া মাছুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।

এভাবে দুই দুই রাকাআত করে ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা উত্তম।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে রাতের শেষ প্রহরে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *